Sunday, September 13, 2009

বিলুপ্তির পথে বাংলার শকুন


৫ সেপ্টেম্বর ছিল 'আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস'। এবারই প্রথম এ দেশে দিবসটি পালন করেছে বাংলাদেশ শকুন গবেষণা ও সংরক্ষণ প্রোগ্রাম, ওরিয়েন্টাল বার্ড ক্লাব, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব এবং ডবিল্গউআরসিসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। সম্প্রতি এ দেশে শকুনের কী অবস্থা, তার একটি জরিপ পরিচালনা করে বাংলাদেশ শকুন গবেষণা ও সংরক্ষণ প্রোগ্রাম। তাদের গবেষণায় শকুন হারিয়ে যাওয়ার ভয়াবহ চিত্র পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও বাংলাদেশ নেচার স্ট্যাডি অ্যান্ড কনজারভেশন ইউনিয়নও দীর্ঘদিন ধরে শকুনের ওপর জরিপ করে আসছে।

লিখেছেন সীমান্ত দীপু

এ দেশে শকুনের যে ক'টি প্রজাতি আছে, তার মধ্যে বাংলা শকুন ছাড়া প্রায় সব ক'টি জাতই হারিয়ে গেছে। বাংলা শকুনও বিলুপ্তির পথে। এদের টিকে থাকার জন্য খাবার আর আবাসস্থল নেই বললেই চলে। সিলেটের গভীর বন আর সুন্দরবনে কালেভদ্রে শকুনের দেখা মেলে।

আসলে শকুনকে ছোট-বড় প্রায় সবাই নামে চেনেন। সত্তরের দশক পর্যন্ত এ দেশে শকুনের দল সহজেই চোখে পড়ত। নব্বইয়ের গোড়ায় দেখেছি, মরা গরু খেতে শকুনের দল কোথা থেকে যেন হঠাৎ হাজির হতো। ভাগাড়ে শকুন আর কাকের চেঁচামেচিতে গ্রামের লোকজন জমে যেত। লোকশ্রুতি এমন যে, গরু মারা গেলে কাক শকুনকে দূরদেশে খবর দিতে যেত। আর ফেরার পথে ছোট্ট কাক দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে না পেরে শকুনের পিঠে চড়ে বসত। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। আসলে শকুন আকাশের অনেক উঁচুতে উঠে ডানা মেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উড়তে থাকে। এদের দৃষ্টিশক্তি এতই প্রখর যে, মাটিতে অথবা পানিতে ভেসে থাকা যে কোনো মরা বস্তু সহজেই দেখতে পায়। তবে শকুনের ঘ্রাণশক্তি নেই। মাত্র এক প্রজন্মের মধ্যে শকুন হারিয়ে গেলেও এ নিয়ে এ দেশে এতদিন পর্যন্ত কোনো আলোচনা হয়নি। অথচ শকুন মানুষের শত্রু নয়, বরং বন্ধুই।

জরিপে গত বছর হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বাংলা শকুনের একটি বড় দল দেখা গিয়েছিল। পুরনো দুটি আমগাছে বাসাও বেঁধেছিল তিন জোড়া শকুন। মাত্র এক মাসের মাথায় আমগাছগুলো কেটে ফেলা হয়। ফলে বহুদিন পর বাংলাদেশে দেখা শকুন ডিম পাড়লেও বাচ্চা ফুটাতে পারেনি। পাখি বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আর হয়তো শকুন এদেশে বাসা করার আস্তানা পাবে না। কিন্তু এই দুঃসংবাদ সংবাদ সত্ত্বেও কিছুটা আশাসঞ্চার হল সম্প্রতি। জুলাই-২০০৯-এ শ্রীমঙ্গলের গভীর বনে দেখা মিলল প্রায় ১৬টি শকুনের বড় একটি দলের। ধারণা করা হচ্ছে, এ দেশে এর চেয়ে বড় শকুনের দল আর নেই। শকুনের বাসা পাওয়া না গেলেও ওই এলাকায় শকুনের বাসা আছে বলে পাখি পর্যবেক্ষকরা বলছেন।

বাংলাদেশে ৫ প্রজাতির শকুনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বাংলা শকুন। এর বৈজ্ঞানিক নাম জেপস বেঙ্গালেনসিস। এজন্য বাংলা শব্দটি চলে এসেছে। এখন গোটা পৃথিবীতেই শকুনের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সংখ্যায় ১০ হাজারের বেশি হবে না। বাংলাদেশে বাংলা শকুন এখন বিরল প্রজাতি। সব মিলিয়ে এ দেশেও এদের সংখ্যা ২০০-এর বেশি হবে না। তাও আবার বেশিরভাগই দেখা যায় সুন্দরবন এলাকায়। আগামী ৫ বছরের মধ্যে এ দেশও শকুনশূন্য হয়ে পড়বে। ঢাকার টঙ্গী এলাকায় একসময় শকুন দেখা যেত। এখনও দু'একটির দেখা মেলে চিড়িয়াখানার আশপাশে। এ দেশ থেকে শকুন হারিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো প্রজননের জন্য আবাসস্থলের অভাব। এরা সাধারণত বট, শিমুল, দেবদারু ও তালসহ বড় বড় দেশি গাছে বাসা বাঁধে। কিন্তু এসব দেশি গাছের আজ বড়ই অভাব। একজোড়া স্ত্রী-পুরুষ বছরে মাত্র একবার একটিমাত্র ডিম পেড়ে বাচ্চা ফুটায়। কোনো কোনো সময় দুটি ডিমও দিতে পারে। ফলে এদের সংখ্যা বৃদ্ধির হারও খুবই কম। এছাড়া বাংলাদেশসহ পুরো এশিয়ার গবাদিপশুকে ডাইক্লোফেনাক নামক ওষুধ সেবন করানো হয়। ফলে গরু মারা যাওয়ার পরও ঐ ঔষধের কিছু কার্যক্ষমতা বজায় থাকে। শকুন মরা গরু খেলে তার শরীরে ওই ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় শকুনের মৃত্যু হয়। এছাড়া বর্তমানে গরু কম মারা যায় কিংবা গেলেও পুঁতে ফেলা হয়। এতে দিন দিন তাদের খাবারও একেবারেই কমে এসেছে। ফলে হারিয়ে গেছে প্রায় ৯৯.৫ শতাংশ বাংলা শকুন।

ভারত সরকার ক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ নিষিদ্ধ করেছে। ভারতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি ক্লোফেনাক ট্যাবলেট একটি শকুনকে খাওয়ানোর কিছুক্ষণ পরই মারা যায়। এই ওষুধের বিষক্রিয়ায় এদের কিডনিতে পানি জমে যায়। ভারত সরকার ওষুধটি নিষিদ্ধ করলেও বাংলাদেশ সরকার কিন্তু নিষিদ্ধ করেনি। বরং এ দেশ থেকেই ভারতে পাচার হচ্ছে ওষুধটি।

পরিবেশের জন্য শকুন খুবই মূল্যবান একটি পাখি। হবিগঞ্জে এদের বাসা পাওয়াটা খুবই আশার কথা। ভারতে শকুনের ক্যাপটিভ ব্রিডিং শুরু হয়ে গেছে। কাজেই শকুনকে হারিয়ে ফেলার আগেই আমাদের সচেতন হতে হবে। বাড়াতে হবে এদের প্রজনন ক্ষেত্র। অথবা ক্যাপটিভ ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে এদের সংখ্যা বাড়িয়ে ছেড়ে দিতে হবে পরিবেশে।

Tuesday, February 3, 2009

আবাসস্থল হারাচ্ছে অনেকেই

কক্সবাজারে ৫২ প্রজাতির ১৬ হাজার জলচর পাখি শনাক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
কক্সবাজারের উপকুলে ৫২ প্রজাতির ১৫ হাজার ৯৩৩টি জলচর পাখি রয়েছে। প্রকৃতি সংরক্ষণ ও গবেষণা সংস্থা ‘মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্স’ সোনাদিয়া, মহেশখালী, কক্সবাজার-টেকনাফ সমুদ্রসৈকত, শাহপরীর দ্বীপ ও নাফ নদের তীর এলাকায় জরিপ চালিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। ২৭ থেকে ৩০ জানুয়ারি চার দিন কক্সবাজারের জলাভুমিতে চালানো সংস্থার শুমারি থেকে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

সংস্থার পরিচালক জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ৫২ প্রজাতির জলচর পাখির মধ্যে ৩৭ প্রজাতির রয়েছে পরিযায়ী পাখি। পাখিশুমারিতে বৈশ্বিকভাবে দুটি বিপন্ন প্রজাতির পাখির সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলো হলো স্পুনবিল স্যান্ডপাইপার ও নর্ডম্যানস গ্রিনশ্যাংক। সোনাদিয়া দ্বীপের বেলেকেরদিয়া অঞ্চলে এ ধরনের আটটি স্পুনবিল গণনা করা হয়। পৃথিবীতে স্পুনবিলের মোট সংখ্যা ৪০০ জোড়ারও কম।

জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার ছাত্র ও বার্ড ক্লাবের সদস্য সামিউল মহসানিন, মো. ফয়সল এবং সোনাদিয়া ও শাহপরীর দ্বীপের দুটি স্থানীয় তরুণ স্বেচ্ছাসেবক দল এই পাখিশুমারিতে অংশ নেয়।
পাখি পর্যবেক্ষকেরা জানান, এখনো সোনাদিয়ার বেলেকেরদিয়া, মহেশখালীর তাজিয়াকাটারচর, পাইকদিয়া, আলোরদিয়ার কাদাভুমি এবং তৎসংলগ্ন বালুচর পাখির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থল হিসেবে গণ্য করা যায়। এ ছাড়া শাহপরীর দ্বীপের বদরমোকাম জলচর পাখির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থল। সেখানে ২০০৬ ও ২০০৭ সালে জরিপ চালিয়ে স্পুনবিলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। সোনাদিয়া ও মহেশখালী অঞ্চলে এবার ১১ হাজার ৮৭৮টি পাখি শনাক্ত করা হয়েছে।

তবে সোনাদিয়া, টেকনাফ, শাহপরীর দ্বীপসহ জরিপকৃত এলাকায় বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ ও জলাভুমির যত্রতত্র ব্যবহারে পাখির আবাসস্থল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মেরিন লাইফের পরিচালক জহিরুল ইসলাম জানান, জরিপ অঞ্চলটি পরিযায়ী পাখির আন্তর্জাতিক উড়োপথ বা ফ্লাইওয়ের অন্তর্ভুক্ত। হাজার হাজার মাইল দুর থেকে পরিযায়ী পাখিগুলো যদি এখানে এসে বসবাসের সুযোগ না পায়, তাহলে পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

সূত্র: প্রথম আলো

Tuesday, January 6, 2009

পাখির কলতানে মুখর হাইল হাওর

বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে হাইল হাওর এখন হাজারো পাখির কলতানে মুখর। শীতের আগমনে হাওরের বিভিন্ন বিলে দেশীয় পাখির সঙ্গে যোগ দিয়েছে অতিথি পাখি।
হাইল হাওরের বিভিন্ন বিল ঘুরে হাওরের জলরাশির বুকে কিংবা কচুরিপানাসহ বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ, লতাগুল্মের আড়ালে ঝাঁকে ঝাঁকে দেশি-বিদেশি পাখি দেখা গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে ‘বাইক্কা বিল অভয়াশ্রমে’।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং ইউএসএইডের তত্ত্বাবধানে গঠিত সমন্বিত সংরক্ষিত এলাকা সহব্যবস্থাপনা প্রকল্প (ইন্টিগ্রেটেড প্রটেকটেড এরিয়া কো-ম্যানেজমেন্ট− আইপ্যাক) সুত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে বাইক্কা বিলে পাখি শিকারিদের উপদ্রব না থাকায় এবং জলজ উদ্ভিদ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ায় এ বিলে দেশীয় পাখিরা স্থায়ী আবাস গড়ে তুলেছে।
আইপ্যাকের কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সদ্যসমাপ্ত মাচ্ প্রকল্পের (ম্যানেজম্যান্ট অব অ্যাকুয়াটিক ইকোসিস্টেম থ্রু কমিউনিটি হাজবেন্ডারি) নজরদারির ফলে হাইল হাওরের বাইক্কা বিলে পাখি শিকারিদের অপতৎপরতা বন্ধ হয়েছে। এ কারণে ওই বিলে দেশি পাখিরা স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে। বিলে অতিথি পাখির আগমনও বেড়ে চলেছে। হাওরে এখন যেসব পাখি দেখা যাচ্ছে এর মধ্যে রয়েছে মেটো রাজহাঁস, গিরিয়া হাঁস ও ল্যাঞ্জা হাঁস, মরচেরং ভুতিহাঁস, পাতি সরালি ও রাজ সরালি। এ ছাড়া দেশীয় পাখির মধ্যে রয়েছে পানকৌড়ি, কানিবক, ধলাবক, গোবক, ধুপনিবক, রাঙ্গাবক, দলপিপি, নেউপিপি, বেগুনিকালেম, কালামাথা কাস্তেচরা, বালিহাঁস, পলাসী কুড়া ইগল ও শঙ্খচিল।
হাওরপারের বাসিন্দারা জানায়, নভেম্বরের শুরু থেকেই হাইল হাওরে দেশীয় পাখির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে অতিথি পাখি। হাওরে পাখির সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিকারিদের তৎপরতাও বেড়েছে। শিকারিরা রাতের আঁধারে হাওরের বিভিন্ন বিলে জালের ফাঁদ পেতে রাখে। ভোরে ফাঁদে আটকানো পাখিগুলো এসে নিয়ে যায়। এসব পাখি মৌলভীবাজার জেলা সদরের পাড়া-মহল্লায় ফেরি করে এবং সিলেটের বিভিন্ন হোটেলে বিক্রি করা হয়।
বাইক্কা বিলের প্রহরী আলাই মিয়া ও আদর উদ্দিন শিকারিদের তৎপরতা প্রসঙ্গে বলেন, শিকারিরা মাঝেমধ্যে বাইক্কা বিলেও ফাঁদ পাতার চেষ্টা করে। রাতে নৌকা নিয়ে তাদের ধাওয়া করতে হয়। এ বছর শিকারির তৎপরতাও বেশি।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদ উল্ল্যাহ্ বলেন, সংবাদ পেলে পুলিশ শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। গত ১৩ ডিসেম্বর হাওরের উত্তর উত্তসুর অংশে শিকারিদের পাতা ৫৭টি জাল পুলিশ জব্দ করে পুড়িয়েছে।

প্রথম আলো, ৭ জানুয়ারি, ২০০৮

Wednesday, November 19, 2008

টানা সাত হাজার মাইল উড়ল দাগি লেজ জৌরালি পাখি

দাগি লেজ জৌরালি বা বার টেইলড গডউইট নামের একটি জলচর পাখি আকাশে বিরতিহীনভাবে সাত হাজার ২০০ মাইল পাড়ি দিয়েছে। শীতকালে অতিথি পাখির হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দেওয়া কোনো নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু টানা আট দিনের বেশি স্থায়ী ভ্রমণ এবং এ ভ্রমণে সাত হাজার ২০০ মাইল পাড়ি, এই প্রথম পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ পাখিটি সুদুর আলাস্কা থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পার হয়ে নিউজিল্যান্ডে পৌঁছায়। এ সময় পাখিটি কোনো বিশ্রাম নেয়নি, খাবারও গ্রহণ করেনি। সে নিজেকে প্রাণিজগতে সবচেয়ে সহিষ্ণু প্রমাণ করেছে। বিজ্ঞানীরা পাখিটির গতিবিধি রেকর্ড করে বলেছেন, প্রাণিজগতে এমন ঘটনা অভুতপূর্ব।

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণে অতিথি পাখির ভুমিকা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ব্যতিক্রমী এ ঘটনাটি বিজ্ঞানীদের নজরে আসে। ২০০৬ ও ২০০৭ সালে কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে তাঁরা বার টেইলড গডউইটের বিচরণ রেকর্ড করেন। তাঁদের গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি ‘প্রসিডিংস অব দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি জার্নালে’ প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণায় দেখা যায়, বার টেইলড গডউইট বিরতিহীনভাবে নয় দিন পর্যন্ত আকাশে বিচরণ করে সাত হাজার মাইলের বেশি পথ পাড়ি দিতে পারে। এ সময় তারা কোনো খাবার খায় না, এমনকি ঘুমায়ও না।
পাখিটির ঠোঁট থেকে লেজ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৩৭-৪১ সেন্টিমিটার। পা দুটোও ছোট ছোট। প্রসারিত ডানার দৈর্ঘ্য ৭০ থেকে ৮০ সেন্টিমিটার। ওজন প্রায় ১৯০ থেকে ৬৩০ গ্রাম। বয়স্ক পাখিদের পায়ের রং নীল ধুসর। ঠোঁটের সরু প্রান্তটি বাঁকা আর গোলাপি রঙের। পেছনের অংশটি ধুসর। গলা, বুক ও পেটের দিকটা লাল, তবে শীতে হালকা সাদা রং ধারণ করে।

দাগি লেজ জৌরালি বিশেষজ্ঞ নেদারল্যান্ডসের গ্রোনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী থিউনিস পিয়েরসমা বলেন, মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে এমন দীর্ঘ পথ একটানা পাড়ি দেওয়ার এ ঘটনা গত বছরে বিজ্ঞানীদের নজরে আসে। তিনি বলেন, গোটা ভ্রমণে পাখিটি বিরামহীনভাবে পাখা ঝাপটায়। এ সময় খাবার গ্রহণ না করলেও দেহে সঞ্চিত শক্তি বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় পাখিটিকে সচল রাখে। সুত্র: গার্ডিয়ান। প্রথম আলো, ২০ অক্টোবর, ২০০৮

http://bdbird.blogspot.com