বার্ড ফ্লু কি?
বার্ড ফ্লু ভাইরাস কী?
বার্ড ফ্লু বা এভিয়েন বা পাখি সম্পর্কিত রোগ একই। আর্থোমিক্সিরিডি গোত্রের ভাইরাস আক্রান্ত পাখিদের রোগ। মুরগি বা যেকোনো পাখি এই ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হয়। এই ভাইরাসের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় ১৮৭৮ সালে। ১৯৫৫ সালে ইতালিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তকে ফাইল প্লেগ নামে পরিচিত করা হয়। বর্তমান নাম বার্ড ফ্লু বা এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। এই ভাইরাসের অনেক সাব-টাইপ বা স্ট্রেন রয়েছে। এসব স্ট্রেনের মধ্যে এইচ-৫, এন-১ সবচেয়ে মারাত্মক। দ্রুত এক পাখি থেকে ঝাঁকের অন্য পাখিদের আক্রমণ করে। পাখির লালা ও মলের মাধ্যমে দ্রুত বিস্তার করে। আক্রান্ত পাখি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়।
কীভাবে ছড়ায়?
বার্ড ফ্লু বা এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস পাখির অন্ত্রে বাস করে। বিষ্ঠা বা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। বাতাস বা আক্রান্ত পাখির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে শ্লেষ্ক্না ও কফ আকারে বের হয়ে এসে সুস্থ পাখিদের আক্রমণ করে। অতিথি পাখিরা সাধারণত এই ভাইরাসের অন্যতম বাহক। আক্রান্ত পাখির বিচরণে, খামার যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও খামারের কর্মীদের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।
চেনার উপায়:
ভাইরাস আক্রমণের তিন থেকে ১০ দিন পর রোগের লক্ষণ পাওয়া যায়। আক্রান্ত পাখির পালক উসকোখুসকো হয়ে যায়। ক্ষুধামন্দা ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। মাথার ঝুঁটির গোড়ায় রক্তক্ষরণ হয়। পায়ের পাতা ও হাফ-জয়েন্টের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে রক্ত জমে যায় ও রক্তক্ষরণ হয়। হঠাৎ করে মুরগির ডিম উৎপাদন হার কমে যায়ে। শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। মৃত্যুহার বেড়ে যায়।
* খামারে হঠাৎ করেই এ রোগ ছড়াতে পারে। একসঙ্গে অনেক মুরগি মারা যাবে। অসুস্থতার লক্ষণ ছাড়াই মারা যেতে পারে। অবসাদ, ঝিমুনি, ক্ষুধামন্দা, উসকোখুসকো পালক, জ্বর। এসব লক্ষণের পর মারা যেতে পারে।
* দুর্বলতা ও চলাফেরায় অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। আক্রান্তরা চুপচাপ বসে থাকে। মাথা মাটিতে লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
* অল্প বয়সের মুরগিদের পক্ষাঘাত দেখা দেবে।
* ডিম পাড়া কমে যাবে; নরম খোসাযুক্ত ডিম পাড়ে।
* গলা ও মাথার ঝুঁটি ফুলে যায়। গাঢ় লাল বা নীল রং ধারণ করে এবং কখনো কখনো ক্ষুদ্র বিন্দুর রক্তক্ষরণ দেখা দেয়।
* আক্রান্তরা শ্বাসকষ্টে ভোগে।
* শরীরের পালকবিহীন অংশ যেমন পায়ে রানের নিচের অংশে রক্তক্ষরণ হবে।
* খামারে ১০০ ভাগ পর্যন্ত মোরগ-মুরগি মারা যায়।
* হাঁস ও রাজহাঁসদেরও একই লক্ষণ দেখা দেবে।
* অনেক ক্ষেত্রে হাঁস রোগের লক্ষণ ছাড়াই জীবাণু ছড়াতে পারে।
শরীরের ভেতরে পরিবর্তন:
* শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে শ্বাসনালী, খাদ্যনালী এবং হূৎপিন্ডের ভেতর ও বাইরে ক্ষুদ্র বিন্দুর মতো রক্তক্ষরণ দেখা যায়।
* চামড়ার নিচে বিশেষ করে ঘাড়ে ও পায়ের গিরায় প্রচুর পানি জমে।
* মৃতদেহ পানিশুন্য হয়ে যেতে পারে।
* প্লীহা, বৃਆ, কলিজা এবং ফুসফুস ইত্যাদিতে ধুসর রঙের মৃত কোষ থাকতে পারে।
* বায়ুথলি অস্বচ্ছ হতে পারে এবং ধুসর বা হলুদাভ তরল পদার্থ পাওয়া যেতে পারে।
* প্লীহা বড় হতে পারে এবং রক্তক্ষরণের ফলে গাঢ় রং ধারণ করতে পারে।
একই লক্ষণের অন্য রোগ:
এসব রোগ-লক্ষণ বার্ড ফ্লু থেকে আলাদা করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এসব রোগেও খামারের মুরগি দ্রুত মারা যায়।
* তীব্র রানিক্ষেত রোগ।
* ডাকপ্লেগ রোগ। মুরগির ডাকপ্লেগ হয় না।
* মুরগির সংক্রামক করাইজা।
* তীব্র বিষক্রিয়া।
কেন মারাত্মক:
এটি মারাত্মক রোগ। খামারের মুরগি দ্রুত মারা যেতে পারে। খামার থেকে খামার ও এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় অল্প সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোগগ্রস্ত মুরগি থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটতে পারে। দুইভাবে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। অতিসংক্রামক হাইপ্যাথজেনিক এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা ঐচঅও, আবার মৃদু সংক্রামক বা লোপ্যাথজেনিক খচঅও অবস্থায়ও ছড়াতে পারে।
1 comments:
আমাদের খামারে ১০০% জাপানি প্যারেন্টস দ্বারা ব্রীড করা জাপানি জাতের কোয়েল পাখি উৎপাদন করছি এবং তা বিভিন্ন খামারীদের তাদের চাহিদা মত দেওয়া হচ্ছে। পোল্ট্রির জগতে একটি বিশ্বাস্থ প্রতিষ্ঠান, ”মা কোয়েল খামার এন্ড হ্যাচারী” দুর্গাহাটা, গাবতলী, বগুড়া।
যোগাযোগ: ০১৭১২ ০৫০৩৯২/ ০১৯৭২ ০৫০৩৯২ আমাদের সম্পর্কে
আও বিস্তারিত জানতে ভিডি চ্যালেনে ঘুরে পারেন।https://www.youtube.com/watch?v=AC946laCTwY&t=3s
Post a Comment