শঙ্খচিল
শঙ্খচিল
সাদাত সেলিম
"এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে- সব চেয়ে সুন্দর করুণ
সেখানে সবুজ ডাঙা ভরে আছে মধুকূপী ঘাসে অবিরল
সেখানে গাছের নাম কাঁঠাল, অশ্বত্থ, বট, জারুল, হিজল
সেইখানে শঙ্খচিল পানের বনের মত হাওয়ায় চঞ্চল।"
যে কোন নদী-নালা, জলাশয়ের আশপাশে সাদা পেটওয়ালা মরচের মতো সোনালি রঙের ডানার চিল দেখতে পাওয়া যায়। এদের লেজের ডগা গোলাকৃতি। মাপে এরা সাধারণ চিলেরই মতো। এরা শঙ্খচিল, ইংরেজিতে Brahminy Kite, বৈজ্ঞানিক নাম Haliastur indus। এরা অ্যাক্সিপিট্রিডি পরিবারের সদস্য। বাংলাদেশে দেখতে পাওয়া প্রায় ৪৩ প্রজাতির চিল, বাজ, ঈগল ও শকুন একই পরিবারের সদস্য।
জলাশয়, নদীর পাড়ের দিকে এবং বর্ষায় ডুবে যাওয়া ধানক্ষেতের আশপাশে এদের সন্ধান পাওয়া যায়। মাছ, ব্যাঙ, ছোটখাটো সরীসৃপ, পোকামাকড় তেকে আরম্ভ করে মানুষের ফেলে দেওয়া বা পরিত্যক্ত খাবারের টুকরা পর্যন্ত এদের খাদ্য।
সাধারণ চিলের মতো শঙ্খচিলের ডাক তীক্ষ্ণ নয়; বরং কিছুটা কর্কশ ও ভাঙা ভাঙা। জলের কাছাকাছি উঁচু গাছের ডালে বর্ষাকালে এরা কাঠি ও ডাল দিয়ে বড়সড় বাসা বানায়। এই চিল জলের কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে। জোয়ারের সময় খাঁড়িগুলো এদের বিশেষভাবে পছন্দ এদের ডাক অনেকটা বাচ্চাদের কান্নার মতো তীক্ষ্ণ। বাংলাদেশে এই চিল স্থায়ী বাসিন্দা।
নদী-নালা ও জলাশয় দূষণের ফলে বিপন্ন হয়ে পড়ছে রূপসী বাংলার প্রিয় কবি জীবনানন্দের শঙ্খচিল।
ছবির চিলটিকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার এক জলাশয়ের কাছ থেকে ক্যামেরাবন্দী করা হয়েছে।
ছবি: সাদাত সেলিম।
সূত্র: প্রথম আলো। ১৮ এপ্রিল ২০০৮
1 comments:
thanks for sharing
Post a Comment